নেকড়ের ছল চাতুরি
এক পাহাড়ে বাস করত এক নেকড়ে, সে খুব নিজেকে চালাক চতুর মনে করতো। একদিন সে খাবার খুঁজতে খুঁজতে হঠাৎ কি হাজির হলো পাহাড়ি এক নদীর ধারে। অন্য ধারে তখন একটি ভেড়ার বাচ্চা মনের আনন্দে নদীর জল খাচ্ছিল। বাচ্চাটি বেশ মোটাসোটা, নরম ও কচি তার গায়ের মাংস। নেকড়ে ভাবতে লাগলো ভেড়ার বাচ্চাটাকে খেতে বেশ ভালোই লাগবে।
কিন্তু নিরপরাধ ভেড়ার শিশুটাকে তো আর বিনা কারণে খাওয়া যায় না, একটা দোষ তো তার খুঁজে বার করতেই হয়। কি আর করা যায়। ভাবতে ভাবতে হঠাৎ তার মাথায় এক দুষ্টু বুদ্ধি এসে গেল। ধমকের সুরে সে ভেড়ার বাচ্চাটাকে বলল কিরে তোর সাহস তো কম নয়, আমার খাওয়ার জল তুই ঘোলা করছিস? ভেড়ার শিশুটি বলল “আপনি কি কথা বলছেন হুজুর, আপনি রয়েছেন নদীর ওপারে আর আমি এপারে জল খাচ্ছি, তা কেমন করে ওপারের জল ঘোলা হলো।
এ কথা শুনে নেকড়ে খুব রেগে গেল। ল্যাজ নেড়ে গর্জন করতে করতে সে বলল, “কীসব আবোল-তাবোল বকছিস? জানিস তুই কার সঙ্গে কথা বলছিস?”
ভেড়ার শিশুটি বলল, “হুজুর আপনি রয়েছেন উপরে আর আমি নীচে। জল তো আপনার দিক থেকে আমার দিকে আসছে। তাহলে আমি কেমন করে আপনার দিকের জল ঘোলা করছি? নেকড়ে তখন অন্য ফন্দি এটি বলল, “আসলে তুই সব ভুলে ভুলে গেছিস, তাই তোর কোন কথা মনে পড়ছে না। গত বছর তুই এমন সময় আমার খাওয়ার জল ঘোলা করেছিলিস। মনে করে দেখ।” অবাক হয়ে ভেড়ার বাচ্চাটি বলল, “সে কি হুজুর তাই বা হবে কেমন করে? গত বছর এমন সময় তো আমার জন্মই হয়নি।”
এ কথা শুনে চতুর নেকড়ে ভাবল হতভাগা বাচ্চাটার মাথায় এত বুদ্ধি। তাই সে সঙ্গে সঙ্গে কথা ঘুরিয়ে বলল, “তা নয় হলো তুই না হয় জল ঘোলা করিস নি, কিন্তু আমার বেশ মনে পড়ছে তোর বাবা এই জল ঘোলা করেছিল আর শোন তোর বাবাও যদি কাজ না করে থাকে তাহলে তোর ঠাকুরদা নিশ্চয় জল ঘোলা করেছিল আর তর্কের খাতিরে যদি ধরেই নিই যে তোর ঠাকুর দাও এমন কাজ করেনি তাহলেও তোর নিস্তার নেই। কারণ তোর ঠাকুরদার ঠাকুরদাই আমার খাবার জল ঘোলা করেছিল। আর সেই অপরাধে তোকেই শাস্তি পেতে হবে। তোর নরম মাংস আমি এখনই চিবিয়ে খাব এই বলে বদমাশ নেকড়ে নদী টোপকে ভেড়ার বাচ্চাটির উপর লাফিয়ে পড়ল। মট করে তার ঘাড়টা মটকে খেয়ে নিল।