ভেড়া ও দুই বলদ
একজন চাষির দুটি বলদ ও একটি ভেড়া ছিল। বলদ দুটি চাষের জমিতে লাঙল দিত আর চাষির গাড়িও টানতো। সারাদিন খুব খাটাখাটনির পর তারা একটু ভালো-মন্দ খেতে চাইত। কিন্তু চাষি তাদের পেট ভরে খেতে দিতে পারতো না। ওই সামান্য খড়, ঘাস, বিচুলি দিয়ে তারা নিজেদের পেট ভরাতো।
ভেড়াটি কিন্তু কোনো কাজ করত না, কেবল দিনরাত শুয়ে বসে কাটাত। তবুও তার কপালে জুটতো রুটি, ভাত আর ভালো ভালো খাবার। চাষি তাকে খুব তোয়াজ করতো। ভালো ভালো খাবার খেয়ে সে দিন দিন বেশ মোটাসোটা, নাদুস নুদুস হতে লাগলো।
একদিন ছোটো বলদ বড়ো বলদ কে বলল, “আর আমি ঘাস বিচুলি এসব খাব না। উপোস করে থাকবো।”
বড়ো বলদ বললো “না খেলে তো তুই শুকিয়ে মরবি।” তখন ছোটো বলদ বলল, “মরি মরবো কিন্তু এভাবে চাষির এই এক চোখামি আমি আর সহ্য করতে পারছি না। ভেড়ার বেলায় ভালো-মন্দ খাবার আর আমাদের বেলা সেই বিচুলি আর ঘাস।”
বড়ো বলদ বলল “ভাই রাগ করিস না, এই খাবারই বোধহয় আমাদের কপালে লেখা আছে। এটা খেলেই হয়তো আমাদের ভালো।”
এই কথা শোনার পর ছোটো বলদ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে নিজের খাবার খেয়ে নিল।
কিছুদিন এইভাবে যাবার পর তারা জানতে পারলো কয়েকদিনের মধ্যে চাষির মেয়ের বিয়ে হবে। মেয়ের বিয়েতে চাষি ওই ভেড়াটাকে কেটে তার মাংস রান্না করে নেমন্তন্ন করা লোকজনকে খাওয়ালো।
তা দেখে ছোটো বলদ বড়ো বলদ কে বলল “ভেড়টাকে কেটে খেয়ে ফেলল যে। বড়ো বলদ তখন মুচকি হেসে ছোটো বলদকে বলল, “এখন বুঝতে পারছিস তো চাষি কেন এত তোয়াজ করতো ভেড়াটাকে। ওই নাদুসনুদুস ভেড়ার মাংস নিশ্চয়ই সকলে খুব আনন্দ করে পেট ভরে খেয়েছে।” ছোটো বলদ কিছু না বলে চোখ বড়ো বড়ো করে বলদের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলো।